মেয়েটি সাঁওতাল নয় (পেপারব্যাক)

জুয়েল কবিরের উপন্যাস ‘মতি তিসাও তালনয়’ বাংলা নারীর প্রচলিত ধারা থেকে একটু আলাদা।
কারণ আছে—এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।

এটি এক তরুণীর গল্প, যার চারপাশে ঘোরাফেরা করছে চিত্রশিল্পী আদনান শামস এবং এক নিউ দিল্লির বাসিন্দা।
জুয়েল বলেন,
‘এইভাবেই মেয়েটি ত্রিপদ খোলে। গোপনে, এক তরুণ-তরুণী দরজা খুলে দেয়।'
এ যেন এক স্বপ্নের বাস্তবায়ন—
এক তরুণীর শিল্পচেতনা, নান্দনিকতা, যৌনতা, নারীদেহ, শ্রেণিচেতনা আর সামাজিক বাস্তবতার চিত্র।

শিষ্ট ও সাহসী জুয়েল কবিরের এই ‘কন্যাসন্তান’ সম্পর্কে বলা কঠিন।
প্রফেসর সুলতান মাহমুদ বলেন,
‘যখন একজন পুরুষ কাপড়হীন হয়, তখন সে এক প্রকার দানবের দ্বারা আক্রান্ত হয়—নগ্নতা। নগ্নতা মানেই অ-অনুসরণ, নগ্নতা একরকম প্রতিরোধের রূপ।’

নগ্নতা বলছে—পূর্ণতার কথা।
কারো মাঝেই পুরোপুরি পূর্ণতা নেই। চোখ বন্ধ করে থাকা বৃথা।
এই উপন্যাস সেই রূপ, যেখানে শিল্পীর দৃষ্টিভঙ্গি ভারসাম্যপূর্ণভাবে প্রতিফলিত হয়।

“এটি এক শিল্পরূপ। বিষণ্ণতার কাতর মুহূর্তেও। পাঠকের মনে কৌতূহল জাগাবে।”
একটা সময় আমি চিড়িয়াখানায় গেলাম। বিভ্রান্তিতে ভুগছি। আমার কোনো কাজ নেই, ব্যথায় আছি। সবকিছু গলায় আটকে গেছে।
এই প্রশ্নগুলো এখনকার সময়েই উঠে আসছে।

এই আলোচনার পরে আমি প্রতীক্ষা করি ট্র্যাজেডির পরবর্তী দৃশ্য।
তবে, কখনো কখনো এ ধরণের গল্প শিশুদের মানসিক সুস্থতার ক্ষতিও করতে পারে।

এই উপন্যাস আধুনিক নন-ফিকশনের আলোচনার জায়গা তৈরি করে।
তবে, চিত্রকলার দুনিয়ায় নগ্নচিত্র এ সময়ের একধরনের আনন্দ ছিল।
সেটাই উপন্যাসে প্রতিফলিত।
জুয়েলের ভাষা, চরিত্র নির্মাণ—অসাধারণ।

উপন্যাসের একপর্যায়ে আদনান ও আর্ট প্রফেসর ডেল বাতাসির সংলাপ:

“এই শুনুন... আদনানের বাতাসি ভ্রমণ।”
অন্যদিকে, ঘটনার বুনন—আমি আবার মন্দিরে যাব।
‘দুই ভাষার বাসা’।
রবির উচ্চারণও এখানে যথাযথ।

এই গানের মাঝখানে ধুধুর ঘোষণাও আছে, আমাদের আলোচনা সংবাদ হয়।
সবই গানে, জুয়েল কবিরের বন্দনায়।
আদনান তখন কিশোর। ব্রহ্মপুত্রের ধারে,
পবিত্র জলে, বেশ্যাদের গল্পে, সংগীত, কবিতা, চিত্রকলা, ভাস্কর্য, শিল্পী, মডেল…

এক কিশোরীর সৌন্দর্যের মধ্যেই আছে অনেক সৌন্দর্য।

— মোমিনুর রহমান